khulna Election news by Joynal 2



 সংসদীয় আসন. খুলনা-১

আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা দীর্ঘ

দলীয় কোন্দলে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভূগছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা

জয়নাল ফরাজী ঃ আওয়ামীলীগের দূর্গখ্যাত খুলনা-১ আসনে (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) এবার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রার্থীর তালিকা দীর্ঘ। আসন রক্ষায় এবার প্রার্থী হতে পারেন নতুন কোন ব্যক্তি। স্বাধীনতার পর থেকে বরাবরই এ আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে আসছেন। কিন্তু গত নির্বাচনে সকল হিসাব নিকাশ পাল্টে যায়। ২০০৮’র নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আমির এজাজ খানকে ৫২ হাজার ৩৮১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী ননী গোপাল মন্ডল। যা গত সব কয়টি নির্বাচনের থেকে কম ব্যবধান। এছাড়া আওয়ামীলীগের বর্তমান সংসদ সদস্য চলতি মেয়াদে কয়েকটি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সুতরাং সব মিলিয়ে এ আসনে ক্ষমতাসীনদের প্রার্থী পরিবর্তনের আভাষ অনেক আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছে।

এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী তালিকায় যারা রয়েছেন তারা হলেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ, বর্তমান সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, সাবেক সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ সোহেল। এদের মধ্যে ৩ জন পূর্বে নির্বাচিত। মনোনয়ন পাওয়ার জন্য সকলেই চালিয়ে যাচ্ছেন তৎপরতা।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গের এই আসনটিতে বরাবরই বিজয়ী হয়ে আসছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিতরা। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলের মধ্যে কোন্দলের কারনে প্রার্থী হন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বিজয়ী হওয়ার পর উপ-নির্বাচনে বিদ্রোহী পঞ্চানন বিশ্বাস বিজয়ী হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসাবে আবারও নির্বাচিত হন তিনি।

এরপর গত নির্বাচনে ননী গোপাল মন্ডল দলীয় সমর্থন নিয়ে ৫২ হাজার ৩৮১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন।

এবার দলীয় কোন্দলের কারনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জোরালো ভাবে উঠে এসেছে। দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফের নিকট এ বিষয়ে সম্প্রতি দাবি জানিয়েছেন দাকোপ উপজেলা আওয়ামীলীগের একাংশ। তিনি তাদের দাবী পূরনের আশ্বাস দিয়ে বলেন, আমি জানতাম এখানকার অবস্থা খারাপ। তিনি আশ্বস্থ করে বলেন, এলাকাবাসীর দাবীর কথা মাথায় রেখে আগামীতে এখানে প্রার্থী দেয়া হবে।

এ বিষয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ও দাকোপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ননী গোপাল মন্ডল দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, দল যাকে চাইবে তাকেই প্রার্থী হিসাবে আমি মেনে নেবো। আগামী নির্বাচনে নেত্রী (শেখ হাসিনা) যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষে আমি কাজ করবো। দলের মধ্যে কোন্দলের বিষয় থাকতে পারে তবে শীঘ্রই এটির সমাধান হবে। আমি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবো কিনা এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি।

তবে দলীয় অভ্যন্তরীন কোন্দলের কথা উড়িয়ে দিয়ে দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস এ প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের মধ্যে কোন কোন্দল নেই। আগামী নির্বাচনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী তবে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তাকেই আমি গ্রহন করবো। এবছর বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কোন সুযোগ নেই। সাধারন মানুষের মধ্যে আমি অনেক দিন থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আশাকরি আমি এবার মনোনয়ন পাবো।

অপরদিকে দলের অভ্যন্তরীন কোন্দল ও প্রার্থী তালিকা দীর্ঘ হওয়ায় অনেকটা দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভূগছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এমতাবস্থায় এ আসনে নতুন কোন মুখ প্রার্র্থী হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে চমক দেখাতে ১৯৯৬ সালের মত এবারও প্রার্থী হতে পারেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বা তার ছোট বোন শেখ রেহানা।

++++++++++========+++++++++++॥

সংসদীয় আসন. খুলনা-১

একক প্রার্থী নিয়ে স্বস্তিতে বিএনপি                       

আওয়ামীলীগের দূর্গে আঘাত হানার সম্ভাবনা

জয়নাল ফরাজী ঃ খুলনা-১ সংসদীয় আসনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিসাব নিকাশ সম্পূর্ন আলাদা। এখন পর্যন্ত প্রত্যেকটি জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা দাপটের সঙ্গে বিজয়ী হয়ে আসছেন। কিন্তু গত নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আমির এজাজ খানের প্রাপ্য ভোট ছিল চোঁখে পড়ার মত। তাই হিসাব এবার অনেকটা আলাদা ভাবছেন স্থানীয় ভোটাররা। আওয়ামীলীগের বাইরে এবার প্রার্থী হতে চলেছেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির এজাজ খান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ.এম এরশাদের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায়, কমিউনিষ্ট পার্টির অশোক সরকার ও খেলাফত মজলিসের গোলাম মোহাম্মদ।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামীলীগের দূর্গখ্যাত দাকোপ-বটিয়াঘাটার এই আসনটিতে বরাবরই বিএনপির অবস্থা খারাপ। আমির এজাজ খান ২০০১ ও ২০০৮ সালে প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন।

২০০৮ সালের নির্বাচনে তার প্রাপ্য ভোট ছিল ৬৮ হাজার ৪২০ ভোট। যা গত সব কয়টি নির্বাচনের থেকে বিএনপির সর্বাধিক প্রাপ্যভোট। তিনি এবারও বিএনপির একক প্রার্থী। চলতি মেয়াদে প্রার্থী হতে তিনি গত নির্বাচনের পর থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নানা কর্মসূচিতে অংশ গ্রহন করেছেন। তার পাশাপাশি তার সমর্থনে অনেকদিন আগে থেকে প্রচারনা চালাচ্ছেন তার স্ত্রী লাভলী খান।

এ বিষয়ে বিএনপির একক প্রার্থী ও জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আমির এজাজ খান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, এই আসনটিতে প্রত্যেকবারই বিএনপি প্রার্থীরা পরাজিত হয়ে আসছেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমি যে সাড়া পেয়েছি তাতে মনেকরি এবার আমি বিপুল ভোটে বিজয়ী হব। হিন্দু অধ্যুষিত এই আসনে অনেক হিন্দুরা এবার আওয়ামীলীগকে প্রত্যাখান করেছে। নির্বাচনের পর দাকোপ ছেড়ে অনেক হিন্দু পরিবার চলে গেছে। তাই আমার ধারনা ধর্ম-বর্ণ নয় সকলেই আমাকে মেনে নিয়ে বিজয়ী করবে। দলীয় মনোনয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, একক প্রার্থী হওয়ায় আমি সকলেরই সমর্থন পাবো। আর একক প্রার্থী হওয়ার সুবাদে আমার কোন অভ্যন্তরীন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এ হিসেবে আমি দলের একমাত্র প্রার্থী।

এই আসনটিতে আরো প্রার্থী রয়েছেন জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সুনীল শুভ রায়। তিনি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের সাথে অনেক দিন থেকে কাজ করছেন। এছাড়া কমিউনিষ্ট পার্টির অশোক সরকার, খেলাফত মজলিসের মহানগর সেক্রেটারি গোলাম মোহাম্মদও এই আসনের প্রার্থী। তারা সকলেই যার যার অবস্থানে অনড়।

এরা সকলেই নির্বাচনী মাঠে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সবমিলিয়ে এবার আওয়ামীলীগের দূর্গে আঘাত হানার সম্ভবনা নিছক নয়। ক্ষমতাসীনদের অভ্যন্তরীন কোন্দলকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী কোন প্রার্র্থী আনতে পারে নতুন চমক।

======++++=====

সংসদীয় আসন. খুলনা-২

আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী আলহাজ্ব মিজান

জঙ্গীবাদ, মৌলবাদ ও যুদ্ধাপরাধ মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়

জয়নাল ফরাজী ঃ- খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে মর্যাদার আসন বলা হয় খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনকে। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ এ আসনটিতে বরাবরই বিএনপি প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে আসলেও স্বাধীনতার পর মাত্র একবার আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। গত ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান তিনি বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে সামান্য ভোটে পরাজিত হন। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী। গত নির্বাচনের পর থেকে জোরালো ভাবেই তিনি নির্বাচনী মাঠে কাজ করে চলেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির দূর্গখ্যাত এই আসনটিতে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। আর সবগুলোতেই হেরেছেন আওয়ামীলীগ  প্রার্থীরা। সর্বশেষ ২০০৮সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই নতুন প্রার্থীর লড়াইয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে ৬৭০ ভোটে পরাজিত হন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান। অল্প ভোটের ব্যবধানে হারায় এবার বিজয়ের ব্যাপারে অনেকটা আত্মবিশ্বাসী তিনি।

দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী ইতিমধ্যে এমন গুঞ্জন শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীই প্রকাশ্যে সংবাদকর্মীদের কাছে মুখ খোলেননি। শুধুমাত্র আলহাজ্ব মিজানুর রহমান ব্যস্ত রয়েছেন নির্বাচনী মাঠে। তিনি বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানান, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিরোধীজোট যে অপপ্রচার চালাচ্ছে আমরা তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সত্যটা সাধারন মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। মাঠ পর্যায়ে কর্মী থেকে মহানগর পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সাথে নির্বাচনের বিষয়ে গণসংযোগ করছি। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড গুলো সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। এখন আমাদের হাতে যে সময় আছে তার মধ্যে আমরা সাধারন মানুষকে অপপ্রচার বিষয়ে বোঝাতে সক্ষম হব। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরাজয় সম্পর্কে তিনি বলেন, হেফাজতের বহুমুখী অপপ্রচারের কারনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন। আসন্ন নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে না। আমাদের সরকারের সফল দিক গুলো তুলে ধরতে পারলেই আমরা বিজয়ী হব।

তিনি আরও বলেন, আমি আওয়ামীলীগের টিকেটে নির্বাচিত হলে মহাজোট সরকারের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।  অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করবো। ইতিমধ্যে মহানগরীতে ৩টি স্কুল ও একটি কলেজ সরকারী হয়েছে। আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল পূনার্ঙ্গ ভাবে প্রস্তুতের চেষ্টা চলছে। কেসিসির নাগরিক সেবা বৃদ্ধির জন্য বর্তমান সরকার ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে এবং ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে যুদ্ধাপরাধ, মৌলবাদ, জঙ্গীবাদ মুক্ত সমাজ গড়ার চেষ্টা করবো। খুলনার উন্নয়নে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ, খানজাহান আলী বিমান বন্দর পূর্নাঙ্গভাবে প্রস্তুত ও মংলা বন্দর আধুনিকায়নের ব্যাপারে সচেষ্ট হবো।

বিভিন্ন মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে জানান, আপাতত তিনি আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী। তার বিপক্ষে দলীয় কোন মনোনয়ন প্রত্যাশী দেখা যাচ্ছে না।

তিনিই দলের এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য প্রার্থী।

সার্বিক পর্যালোচনায় বোঝা যায়, এবার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকটা জোরালো ভাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী। বিভিন্ন গনসংযোগের মধ্যে ব্যস্ত রেখেছেন নিজেকে। মূলত খুলনার নির্বাচণী মাঠ এখন আওয়ামীলীগের দখলে।  বিএনপির দূর্গে এবার আওয়ামীলীগ প্রার্থী আঘাত হানার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন জোরালো ভাবেই।

======++++++====

সংসদীয় আসন খুলনা-২

মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান ও সাবেক এমপি

জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেই মহানগর বিএনপিতে

জয়নাল ফরাজী ঃ- বিএনপির দূর্গখ্যাত খুলনা-২ আসনে বিএনপি থেকে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই প্রভাবশালী নেতা। একজন বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। আরেকজন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ আলী আসগার লবী। তারা দুইজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেই বলে জানিয়েছেন এ প্রতিবেদকদ্বয়কে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, মহানগরীর এ আসনকে মর্যাদার আসন হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। স্বাধীনতা পরবর্তী শুধু একবার বাদে সবকয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে আসছেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সাবেক স্পীকার রাজ্জাক আলী নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে জয়লাভ করেন। এরপর তার ছেড়ে দেওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে তৎকালীন বিএনপির মহানগর শাখার আহবায়ক আলী আসগার লবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় কারাগারে থাকায় নজরুল ইসলাম মঞ্জু ছিলেন জাতীয়তাবাদী দলের একমাত্র প্রার্থী। সে সময় দুই নতুন মুখের লড়াইয়ে আলহাজ্ব মিজানের সাথে ভোট যুদ্ধে ৬৭০ ভোটে বিজয়ী হন বর্তমান এমপি।

নির্বাচনের পরের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিসিবির সাবেক সভাপতি আলী আসগার লবী দীর্ঘদিন ধরে খুলনার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। নির্বাচনের আগ মুহুর্ত গত এক বছর ধরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। ২০০৬ সালের মত এবারও নগরীর বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোতে চলছে গ্রপিং। মূলত জাতীয়তাবাদী যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে গ্র“পিং অনেকদিন থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এছাড়া নগরীর সোনাডাঙ্গা ও সদর থানা এলাকায় এই দুই মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছবি সম্বলিত প্যানা ও পোষ্টার শোভা পেলেও এরা দুইজনই এগুলোকে নির্বাচনী প্রচার না বলে উড়িয়ে দিলেন। পাল্টা-পাল্টি গ্র“পিংয়ে ২ নেতার ছবি ব্যবহার করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা চালাচ্ছেন নানা কর্মকান্ড। সম্প্রতি গ্র“পিংয়ের কারনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভা পন্ড হয়। এর আগে যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদকের খুলনায় আসা নিয়ে সমাবেশ ডাক দিলে একই ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত নই। এই সরকারের আমলে কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবো না। দলের দাবি মেনে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পূর্নবহাল করলেই নির্বাচনে অংশ নেবো। এখন আমাদের নেতাকর্মীরা সাংগঠনিক কর্মকান্ডে ব্যস্ত রয়েছেন। ২২ সেপ্টেম্বর চেয়ারপারসনের আগমন উপলক্ষ্যে কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি আমরা। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব । দলের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত হিসেবে আমি মেনে নেবো। মনোনয়ন নিয়ে তিনি বলেন, দলের চেয়ারপার্সন বিবেচনা করেই মনোনয়ন দিবেন। যারা শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় সক্রিয় থাকেন তাদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। গ্র“পিং নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলে কোন গ্র“পিং নেই। মৌসুমী  রাজনীতিক ব্যক্তির সঙ্গে যারা যুক্ত তারা দলের কেউ না।

অপরদিকে আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী আলী আসগার লবী বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরেই খুলনা ছিলাম না এখন আসছি। দলের সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব নির্বাচনে অংশ নেব কিনা। আমি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। দল মনোনয়ন দিলে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হব।  নির্বাচন নিয়ে আমি এখন মন্তব্য করতে রাজি নই।

তৃণমূল নেতাকর্মী সূত্র জানায়, দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গ্রপিং চললেও দল স্বীকার করছেনা। মূলত আলী আসগার লবী ও নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে কেন্দ্র করেই এই গ্র“পিং। এর কারনে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অনেকটা সুযোগ লাগাতে পারেন বলে সূত্র জানায়।

সংসদীয় আসন খুলনা-৩

মনোনয়ন দৌড়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও তরুণ নেতা

আসন নিজেদের দখলে রাখতে চায় আওয়ামীলীগ

জয়নাল ফরাজী ঃ খালিশপুর-দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানার আংশিক এলাকা নিয়ে গঠিত খুলনা-৩ আসন। স্বাধীনতার পর থেকে মহানগরীর শ্রমিক অধ্যুষিত এই আসনটি অধিকাংশ বার দখলে রেখেছে বিএনপি। সমানহারে পিছিয়ে নেই আওয়ামীলীগ। শিল্পাঞ্চলের এই আসনটিতে এবার জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ জন। এরা হলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, তরুন আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান খান খোকন ও শেখ সৈয়দ আলী। এরা প্রত্যেকেই মনোনয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শিল্পাঞ্চলের এই এলাকাটিতে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম। তিনি একাধিকবার দল পরিবর্তন করে বড় দুই দল থেকেই নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেন। ঐ নির্বাচনে বর্তমান শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের কাছে পরাজিত হন। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের পাশাপাশি মনোনয়নের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন আওয়ামীলীগ নেতা ও কেসিসির প্যানেল মেয়র-২ মনিরুজ্জামান খান খোকন এবং সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতা শেখ সৈয়দ আলী।

প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি মনিরুজ্জামান খোকন গত সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই তার সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকায় প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্যানা, ফেস্টুন, পোস্টারের মাধ্যমে জনগনের কাছে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। সভা সমাবেশের মাধ্যমে তিনি শিল্পাঞ্চলে অনেক পরিচিতি লাভ করেছেন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ১ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সাবেক কাউন্সিলর তিনি। একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এমপি পদে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য তিনি এবার কেসিসি নির্বাচনে অংশ নেননি। অপরদিকে শেখ সৈয়দ আলীও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি মনোনয়নের জন্য গণসংযোগ ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে ব্যস্ত রেখেছেন।

খুলনা মহানগরীর এই আসনটিতে মনোনয়ন দেয়া প্রসঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, খুলনার ৬টি আসনেরই প্রার্থী মনোনয়ন নিজেই দিবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ অঞ্চলের সকল প্রার্থীদের চেনেন। ত্যাগী ও কর্মঠ প্রার্থী দেখেই মনোনয়ন টিকেট  প্রদান করবেন। তবে আমি মনে করি খুলনা-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মন্নুজান সুফিয়ান দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে যুক্ত। শ্রমিক এলাকায় তার বেশ জনপ্রিয়তা। তারই আন্তরিকতায় খুলনার মৃতশিল্পাঞ্চল আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, মন্নুজান সুফিয়ান মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য।

এদিকে এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী মনিরুজ্জামান খান খোকন বলেন, আমি দলের স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলের কাছে এই আসনে মনোনয়ন চাইবো। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব। বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নেই বলে তিনি বলেন, দলের স্বার্থে রাজনীতি করি নিজের স্বার্থে নয়।

অপরদিকে মনোনয়ন নিয়ে এই আসনটিতে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগে দেখা দিতে পারে জটিলতা। শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাচ্ছেন কে ? প্রতিমন্ত্রী না তরুন আওয়ামীলীগ নেতা।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এই অঞ্চলে যিনি প্রার্থী হোননা কেন তাদের প্রত্যেকেরই মূল অঙ্গীকার শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন করা।

সংসদীয় আসন খুলনা-৩

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অর্ধডজন

শিল্পাঞ্চলের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা মূল প্রতিশ্র“তি

জয়নাল ফরাজী ঃ শ্রমিক অধ্যুষিত খুলনা-৩ আসনে বাংলাদেশ জাতীয়াবাদী দল বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন। এরা প্রত্যেকেই শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সঙ্গে পরিচিত। এই আসনেই বিএনপি থেকে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেন সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম,খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, মহানগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান মিঠু, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম,বিএনপি নেতা ফকরুল আলম। এরা সকলেই স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে যুক্ত।

সংশ্লিষ্ট তথ্যানুযায়ী, খালিশপুর দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানার এই আসনটি এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে ধরে রাখতে পারেনি। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে এই আসনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আশরাফ হোসেন বিজয়ী হন। ২০০৭ সালে সংস্কারপন্থী হিসেবে দল থেকে বহিস্কার হন তিনি।১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগের টিকেটে বিজয়ী হন কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম। কিন্তু ২০০৮ সালে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীর কাছে ১৬ হাজার ৬১০ ভোটে পরাজিত হন তিনি।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, একাধিকবার দল পরিবর্তনের কারনে গত নির্বাচনে সেকেন্দার আলী ডালিম পরাজিত হন। তাছাড়া গত নির্বাচনে ভোট গ্রহনের দিন এই নেতা নিজের ভোট নৌকা মার্কায় প্রদান করে হাস্যরহস্যের সৃষ্টি করেন। শিল্পাঞ্চলের এই সাবেক সংসদ সদস্য গত নির্বাচনের পর থেকে অনেকটা জনবিছিন্ন। দীর্ঘদিন ধরে তাকে নির্বাচনী মাঠে দেখা যাচ্ছে না। সেই আলোকে বিএনপির এই আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এই আসনে আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি। তিনি অনেকদিন ধরে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন।

এ আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু গত কেসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। দলের সিদ্ধান্তে মহানগর সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। এবার জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে তিনি অটল।

শ্রমিক অধ্যুষিত এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে (বিএনপি) সবচেয়ে এগিয়ে তরুন বিএনপি নেতা আরিফুর রহমান মিঠু। তিনি মনোনয়ন পেতে বেশি আত্মবিশ্বাসী। দীর্ঘ দিন ধরেই এই অঞ্চলে সভা সমাবেশ প্যানা-ফেস্টুনের মাধ্যমে নিজেকে জনপ্রিয় হিসেবে তুলে ধরেছেন। এস,এম তারিকুল ইসলাম ও ফকরুল আলম ও মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা সকলেই আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী।মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে বিএনপি ছাড়া ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী হলেন কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী মাওলানা নাসির উদ্দিন।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস এই আসনে একাধিকবার নির্বাচন করেছেন। গত নির্বাচনে মহোজোটের উম্মুক্ত আসনে তিনি পরাজিত হন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। রাজনীতির পাশাপাশি বাস-মালিক সমিতির মাধ্যমে শ্রমিকদের মাঝে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন।

শ্রমিকদের এই অঞ্চল ঘুরে জানা যায়, আসনের প্রতিটি প্রার্থীরাই প্রতিশ্র“তি হবে মৃৃতপ্রায় শিল্পাঞ্চলের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা। রাজনীতি ও আমলাতান্ত্রিকতার কারনে এই অঞ্চলের অনেক মিল কারখানা আজ বন্ধ। তাই মৃত শিল্পাঞ্চলকে সজ্জল করা প্রত্যেক প্রার্থীর সম্ভাব্য প্রতিশ্র“তি। এই আসনের মনোনয়ন বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এখন কোন ভাবনা নেই। নিজেদের দাবী গুলো বাস্তবায়ন করা জরুরী। আর নির্বাচন হলে প্রার্থীর মনোনয়ন দেবেন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৪

আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা দীর্ঘ

খুলনার ঝুঁকিপূর্ণ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ

জয়নাল ফরাজী ঃ খুলনার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন মহাজোট খুলনাÑ৪ (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) আসনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এই কারনে উক্ত আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা দীর্ঘ। তালিকায় যারা রয়েছেন তারা হলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক হুইপ এস,এম মোস্তফা রশিদী সুজা,  বর্তমান সংসদ সদস্য মোল্ল­া জালাল উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল,  রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আকবার শেখ, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ এবং তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বাচ্চু। এদের মধ্যে অধিকাংশ মনোনয়ন প্রত্যাশী খুলনার আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্টতার সাথে জড়িত।

সংশ্লিষ্ট তথ্যানুুযায়ী, খুলনার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটিতে সবসময়ই আওয়ামীলীগের প্রভাব অনেকটা বেশি। গত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের তৎকালীন প্রার্র্থী ও সাবেক হুইপ মোস্তফা রশিদী সুজা কারাগারে থাকায় প্রার্থী হন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোল্ল­া জালাল উদ্দিন। তার কাছে ১১ হাজার ৬৬৯ ভোটে পরাজিত হন বিএনপি সমর্থিত প্রাথী শরীফ শাহ কামাল তাজ। নির্বাচনের পর জেলা আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীন কোন্দলে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে হতাশায় পড়েন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে প্রত্যাবর্তন করেন সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা রশিদী সুজা। আওয়ামীলীগের মনোনয়নের এই দাবিদার এবারও মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

এছাড়া এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. মসিউর রহমান প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হওয়ার পর জোরালো ভাবেই প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থী হওয়ার জন্য। তিনি মাঝে মধ্যে খুলনায় এসে সভা-সমাবেশ, গণসংযোগের মাধ্যমে ব্যস্ত রেখেছেন নিজেকে। বর্তমান সংসদ সদস্য মোল্ল­া জালাল উদ্দিনের আওয়ামীলীগের থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত আসুক না কেন তিনি এখনও হাল ছাড়েননি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে।

রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আকবর শেখ আওয়ামীলীগ থেকে এবার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি গত নির্বাচনের পর থেকে মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি রূপসাসহ তেরখাদা, দিঘলিয়া উপজেলাও প্রচারনায় ব্যস্ত রয়েছেন।

জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামাল মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। যুবলীগের সভাপতি হওয়ার সুবাদে তিনি জেলার প্রতিটি অঞ্চলে অনেক পরিচিত। তাই মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়কে সুনজরে দেখেন তিনি। কামরুজ্জামান জামাল তরুন প্রজন্মের কাছে অনেক জনপ্রিয়। ঝুঁকিপূর্ণতাকে কাজে লাগিয়ে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আত্ম-বিশ্বাসী তিনি। শফিকুর রহমান পলাশ ও সরফুদ্দিন বাচ্চু যার যার স্থানে থেকে প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন। এরা দুজনও এবার এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। সার্বিক বিষয় নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস,এম মোস্তফা রশিদী সুজা দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, এই আসনে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। দল মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব। আমার অনুপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে কেউ প্রার্থী হোক তা আমি চাইনা। কোন্দল বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের মত একটা বড় দলে কোন্দল থাকতেই পারে। তবে আগামী নির্বাচনে আগে সমঝোতা করে কোন্দল মিটিয়ে নেওয়া হবে। আমি চাই জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনীত করা হোক।

তৃণমূল নেতাকর্মী সূত্র জানায়, মহাজোটের এই আসনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখানে প্রবীনদের সাথে সাথে নবীন প্রার্থীরাও মনোনয়ন পেতে অনেক আত্মবিশ্বাসী। আর দলীয় কোন্দলকে কেন্দ্র করে তৎপর হতে পারছেন না কেউ।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৪

মনোনয়নকে কেন্দ্র করে কোন্দলে বিএনপি

দূর্বল প্রার্থীর কাছে হারায় দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ

জয়নাল ফরাজী ঃ মহাজোটের পাশাপাশি খুলনা-৪ আসনে ঝুঁকিপূর্ণ আসন হিসেবে বিবেচনা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) এর নেতৃবৃন্দ। খুলনার অন্যতম এই আসনে একাধিকবার বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। গত ৪ টি সংসদ নির্বাচনে মাত্র একবার বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী।

সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, খুলনা-৪ (রূপসা-তেরখাদা ও দিঘলিয়া) আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও তৎকালীন মহানগর বিএনপির সভাপতি এম.নুরুল ইসলাম দাদু ভাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জেলা সহ-সভাপতি মোল্লা জালাল উদ্দিনের কাছে পরাজিত হন বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তরুন শিল্পপতি শরীফ শাহ কামাল তাজ। তিনি ১১ হাজার ৬৬৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তিনি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়া তার দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আসন্ন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিএনপি থেকে এবার মনোনয়ন চাইবেন জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শফিকুল আলম মনা, তরুন শিল্পপতি শরীফ শাহকামাল তাজ ও আজিজুল বারী হেলাল। বিএনপি তথা ১৮ দলীয় জোটের জরিপে এই আসনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়েছে। তাদের ভাষায় আওয়ামীলীগের দূর্বল প্রার্থীর কাছে পরাজিত হওয়ার বিএনপি থেকে প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।

এছাড়া শফিকুল আলম মনা কেসিসি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে মহানগর সাধারন সম্পাদক  মনিরুজ্জামান মনিকে সমর্থন দেন। তাই আগামী নির্বাচনে তিনি জোরালো মনোনয়নের দাবিদার। এই আসন থেকে মনোনয়ন পেতে তিনি জোরালো ভাবেই সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মনোনয়ন দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে প্রচারনা চালাচ্ছেন। আর বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের সুপারিশের কারনে তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাগ্রে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল জন্মগতভাবে রূপসার সন্তান। ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকাকালীন তিনি এই আসনে মনোনয়নের ব্যাপারে সোচ্চার ছিলেন। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে তিনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে এই আসনে মনোনয়ন না দিয়ে ঢাকা-১৮ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সেই আসনে তিনি পরাজিত হন। তিনি খুলনা-৪ আসনে আবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। আর দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের সুবাদে তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি এবারও নির্বাচনে অংশ নিতে প্রচারনা ও গনসংযোগ এর মধ্যে ব্যস্ত রয়েছেন।

অপরদিকে খুলনা-৪ আসনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপিতে দেখা দিয়েছে কোন্দল। হেলাল-তাজ গ্র“পের মধ্যে চলছে কোন্দল। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট দলীয় কর্মীসভা নিয়ে হেলাল ও তাজ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। এতে ৮ জন আহত হয়। পরের দিন তাজ গ্র“পের ঢালী গোলাম ফারুক বাদী হয়ে অপর গ্র“পের ১৮ নেতাকর্মীর নামে সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা করেন।

মামলার একদিন পর নিজবাড়ী থেকে খুলনায় আসার পথে গোলাম ফারুককে মারপিট করে দুবৃর্ত্তরা। এ ঘটনায় হেলাল গ্র“পের মাসুদুর রহমান মন্টা বাদী হয়ে তাজ গ্র“পের ৯ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। তবে এই বিষয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে মহানগর ও জেলা বিএনপি’র দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্যোগে ২ গ্র“পের মধ্যে সমঝোতা করা হয়।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৫

মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী লড়াই

রাজনৈতিক কর্মকান্ডে এগিয়ে আছেন আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা

জয়নাল ফরাজীঃ খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা রয়েছেন মাঠে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি প্রচার-প্রচারনাও চালাচ্ছেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ থেকে এবার এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামীলীগের ৩ প্রভাবশালী নেতা। এরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ, অর্থনীতিবিদ ড.মাহবুব-উল-আলম ও ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হাদি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জেলার দুই উপজেলা ডুমুরিয়া ও ফুলতলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৫ আসন। বিগত ৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩টি নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। আসনটি বেশিরভাগ সময়ই দখলে রয়েছে তাদের।  গত ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ জয়লাভ করে।

২০০১ সালের নির্বাচনে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি নারায়ন চন্দ্র চন্দ ৪ হাজার ভোটে পরাজিত হন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মিয়া গোলাম পরওয়ার এর কাছে। সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে নারায়ন চন্দ্র ২৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন। বর্তমান সংসদ সদস্য সরকারের উন্নয়নমুখী কর্মকান্ডের পাশাপাশি গণসংযোগ এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন। মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে তিনি এবারও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারনা। তার সমর্থনে নির্বাচনী এলাকায় চলছে নানা কর্মসূচি। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন অর্থনীতিবিদ ড.মাহবুব-উল-আলম। তার পরিবর্তে মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য। এবারও তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী।

গত নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছেন। দলের মধ্যে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আরও এক নেতা হলেন জেলা আ’লীগের যুগ্ম-সম্পাদক ও ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হাদী। তিনিও এলাকায় গণসংযোগ এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয়ের সূত্রধরে তিনি এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী।

প্রভাবশালী এই ৩ প্রার্থী ছাড়াও এ আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন ফুলতলা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন এলাকা ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এই বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলা ঘুরে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের ছবি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে তৈরী করা হয়েছে প্যানা ও ফেস্টুন। দলীয় কর্মকান্ড ছাড়াও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা। অন্যান্য দলের প্রার্থীদের চেয়ে  খুলনা-৫ আসনে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অনেক এগিয়ে আছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব-উল-আলম দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে আমরা ৬ জন মনোনয়ন চেয়েছিলাম। সেখান থেকে বর্তমান এমপিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। আমরা সকলেই তার পক্ষে কাজ করেছি। এবারও দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমি তার পক্ষেই মাঠে নামবো। আমার বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা নেই। মুলত প্রার্থী মনোণীত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে আমি মনেকরি প্রার্থীর চিন্তা, চেতনা ও দক্ষতার কথা বিবেচনা করে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া উচিত।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৫

জামায়াত’কে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি

নির্বাচনী প্রচারণা নেই তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মাঝে

জয়নাল ফরাজীঃ খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা পুরোদমে প্রচারনা চালালেও বিরোধী বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতা নেই। এই আসনে নির্বাচনী মাঠ আওয়ামী লীগের দখলে থাকলেও অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে ১৮ দল। বিএনপি থেকে এবার এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ২ জন। এরা হলেন ডাঃ গাজী আবদুল হক ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোল্লা আবুল কাশেম।

সূত্র জানায়, গত ৪টি নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা দাপটের সঙ্গে ৩ বার বিজয়ী হন। সেক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে বিএনপি। গত ২ বার জাতীয় নির্বাচনে  জোটের শরিকদল জামায়াতকে ছাড় দিয়ে আসছে বিএনপি। কিন্তু এই আসনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতকে ছাড় দিতে রাজী নয় বিএনপি নেতাকর্মীরা। ২০০১ সালের নির্বাচনে চার দলীয় জোটের শরিকদল জামায়াতের মহানগর শাখার সাবেক আমির অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের নারায়ন চন্দ্রকে পরাজিত করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে একই প্রার্থীর কাছে ২৯ হাজার ভোটে পরাজিত হন তিনি। আগামী নির্বাচনের জন্যও জামায়াত এ আসনে গোলাম পরওয়ারকে প্রার্থী হিসেবে চুড়ান্ত করেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। তাই এবার নিজেদের আসনে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির দুই নেতা। তারা জামায়াতকে ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে রাজী বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ডুমুরিয়া-ফুলতলা এই আসনটিতে স্থানীয় বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেদের আসন পুনরুদ্ধার করতে মাঠে নামিয়েছেন পছন্দের নেতাদের। মনোনয়নের দাবিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ২ প্রভাবশালী প্রার্থী। সরেজমিনে দুই উপজেলা ঘুরে জানা গেছে, আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে বড় দুই দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে নেমেছেন। একদিকে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা প্যানা-ফেস্টুন ও ব্যানার এবং সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মধ্যে সময় অতিবাহিত করলেও এ থেকে অনেকটা পিছিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। মুলত এই দুই উপজেলার নেতাকর্মীরা দলের অভ্যন্তরীন কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার খুলনায় আগমনের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত তারা।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ডাঃ গাজী আবদুল্লাহ হক গত নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। সাংগঠনিক কর্মকান্ডের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা অনেকটা দূর্বল তার। দলের মধ্যে অভ্যান্তরীন কোন্দল চলে আসলেও এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা মাত্র ২ জন। এদিকে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোল্লা আবুল কাশেমও এই আসনে প্রার্থী হতে অনেক তৎপর। তাদের দুই জনের দাবি যাতে আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে ছাড় দেওয়া না হয়। নিজেদের আসন পুনরুদ্ধার করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

এদিকে এই আসনে বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য দলের প্রার্থীরা হচ্ছেন জাতীয় পার্টির মহানগর সাধারন সম্পাদক মোল্লা মুজিবর রহমান, কমিউনিষ্ট পার্টির ফুলতলা উপজেলা সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা। বিএনপির পাশাপাশি সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা। বিএনপির পাশাপাশি এরাও চালাচ্ছেন জোর নির্বাচনী প্রচারণা। নিজেদের দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমেই নেমেছেন নির্বাচনী মাঠে।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৬

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় ৪ জন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে নবীন-প্রবীনদের মনোনয়ন লড়াই

জয়নাল ফরাজী ঃ খুলনার আইলা বিধ্বস্ত দুই উপজেলা “পাইকগাছা ও কয়রা”কে নিয়ে গঠিত খুলনার সর্বশেষ সংসদীয় আসন-৬। খুলনার অন্যান্য সংসদীয় আসনের মত এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের খুব একটা সফলতা নেই। গত নির্বাচনে এই আসনে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হন। বর্তমান সংসদ সদস্যের অবস্থান ঝুঁকিতে থাকায় এবং দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে ক্ষমতাসীনদের এই  আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের আভাষ বেশ জোরালো ভাবেই শোনা যাচ্ছে।

উপকুলীয় এই অঞ্চলটি থেকে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা প্রবীন ও নবীনদের সমন্বয়ে ৪ জন। এরা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা, প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট নুরুল হক, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টার পত্মী ইভা রহমান এবং জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু। তবে মনোনয়ন লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন প্রবীনদের মধ্যে এ্যাড. নুরুল হক ও নবীনদের মধ্যে আকতারুজ্জামান বাবু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৪ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে এই আসনটিতে আওয়ামীলীগের তেমন একটা সফল্য নেই। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ রুহুল কুদ্দুসকে পরাজিত করেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের মাঠ জরিপে এই নেতার অবস্থান ঝুঁকিতে। দলীয় কোন্দল আর তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্কের  অবনতির কারনে তার এই অবস্থা বলে জানা যায়। এদিকে এই আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের সংবাদ এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন হলে কে হতে পারেন এই আসনের আগামী প্রার্থী। তৃণমূল কর্মীরা প্রার্র্থী পরিবর্তনের ইঙ্গিতকে স্বাগত জানিয়ে দলের ত্যাগী পরীক্ষিত ইমেজের প্রার্থীর দাবি জানিয়েছেন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানা এখনো মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি মনে করেন আগামী নির্বাচনেও তাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

এছাড়া এ্যাড. নুরুল হক প্রবীন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি এবার নির্বাচনে অংশ নিতে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। মনোনয়নের ব্যাপারেও বেশ আশাবাদী। প্রার্থী পরিবর্তনের আভাষ যেন তার প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে অনেকটা পরিস্কার।

এদিকে এই আসনে নতুন প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউরের স্ত্রী ইভা রহমান। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নির্বাচনে প্রার্থী হতে আশাবাদী।

অপরদিকে নবীন প্রার্থীদের মধ্যে জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু বেশ জোরালো ভাবেই নেমেছেন মনোনয়নের দাবিতে। তিনি দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, জনগনকে সাথে নিয়ে আমি কাজ করি। সেক্ষেত্রে আমি মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুসন্ধানী দল তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এই আসনে বর্তমান অবস্থা জানেন। সেক্ষেত্রে আমি মনেকরি মনোনয়ন আমিই পাবো। এক প্রশ্নের জবাবে এই যুবনেতা বলেন, সোহরাব আলী সানা ও এ্যাড.নুরুল হক প্রবীন রাজনৈতিক নেতা। আমি তাদের শ্রদ্ধা করি। তবে নির্বাচনে যার যার দক্ষতার মাধ্যমেই মনোনয়ন দেওয়া হোক। এরা দুজনই প্রবীন তাই আমার ধারনা তাদের পাশাপাশি নবীনদের সুযোগ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমার শক্তি। জনগণের ভালবাসা আমার সাহস। জনপ্রিয় নিয়েই আমি নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।

সুতরাং, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হতে জোরালো ভাবেই নেমেছেন এই ৪ জন। কে পাচ্ছেন এই আসনের মনোনয়ন। প্রবীন না নবীন তা এখন দেখার অপেক্ষায় পাইকগাছা-কয়রাবাসী।

সংসদীয় আসন. খুলনা-৬

বিএনপিতে মনোনয়নের দাবিদার ৪ হেভিওয়েট প্রার্থী

আইলা বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন প্রার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জ

জয়নাল ফরাজী ঃ খুলনার সংসদীয় আসন-৬ (পাইকগাছা ও কয়রা) এ বরাবরই জোটগত ভাবে জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন দিয়ে আসছে বিএনপি। খুলনার এই আসনটি খুলনাবাসীর জামায়াতের ঘাঁটি বলে পরিচিত। সম্প্রতি কয়রায় পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষে নিহত হন এক পুলিশ সদস্য। এ থেকে লক্ষ্য করা যায় এই অঞ্চলে জামায়াতের তৎপরতা কতটা। তবুও জোটগত ভাবে ছাড় না দিয়ে এই আসনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান বিএনপির ৪ হেভিয়েট প্রার্থী। এরা হলেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য স.ম বাবর আলী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারন সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক ও এ্যাব-খুলনার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এম.এম আব্দুল গোফরান। এছাড়া এই আসনে জামায়াত মহানগর সভাপতি আবুল কালাম আজাদকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা করেছে। জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নের দাবিদার জেলা সভাপতি শফিকুল আলম মধু ও মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর। কমিউনিষ্ট পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ আব্দুল হান্নান।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯১ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী শাহ রুহল কুদ্দুস বিজয়ী হলেও ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হন। গত ৪ টি নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী যখন যে দলের প্রার্থীরা বিজয়ী হন তখন সেই দল সরকার গঠন করেন। তাই এবার নির্বাচনে খুলনাবাসীর নজর থাকবে এই আসনটির উপর।

এদিকে জামায়াত প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস অসুস্থ থাকায় বর্তমানে নতুন প্রার্থী হিসেবে আবুল কালাম আজাদ মনোনয়ন পেয়েছেন বলে ধরা যায়। কিন্তু গত নির্বাচন গুলোর মত এবার ছাড় না দিয়ে প্রার্থী হতে চান বিএনপি হেভিওয়েট প্রার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনী আমেজে বর্তমানে ব্যস্ত বিএনপির ৪ সম্ভাব্য প্রার্থী। এদের মধ্যে স.ম বাবর আলী প্রচারনায় রয়েছেন। তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তিনি আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী হতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মনিরুজ্জামান মন্টু জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হওয়ার সুবাদে সভা সমাবেশ, গণসংযোগ ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন। এছাড়া দলীয় নানা কর্মসূচির মাধ্যমে তার সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি খুলনায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি নির্বাচনী মাঠ দখলে রেখেছেন বলা যায়। তিনি আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তরুনদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। ছাত্রনেতা হওয়ার কারনে যুবসমাজের কিছু অংশ তার মনোনয়ন আশা করেন। তাছাড়া বর্তমানে দেশের প্রেক্ষাপটে যুব সমাজের সমর্থন প্রার্থীদের প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে।

এছাড়া বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন এ্যাব-খুলনার সভাপতি আব্দুল গোফরান। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে প্রার্থী হতে বেশ তৎপর। নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন।

খুলনার এই নির্বাচনী এলাকার সার্বিক বিষয় নিয়ে ইঞ্জিঃ আব্দুল গোফরান দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, দল থাকে মনোনয়ন দিবে আমি তার পক্ষে কাজ করবো। এ্যাব এর সভাপতি হিসেবে আমি মনোনয়নের দাবিদার। দল মনোনয়ন না দিলে নির্বাচনে অংশ নেবো না। জেলা বিএনপির গ্র“পিং নিয়ে তিনি বলেন আমি কোন গ্র“পিংয়ের মধ্যে নেই। আমি কাউকে সমর্থন দেবো না কেন্দ্রীয় কমিটি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

নির্বাচনী এলাকা নিয়ে তিনি বলেন, আমার সম্ভাব্য নির্বাচনী এলাকা পাইকগাছা-কয়রা ঘুর্ণিঝড় আইলা বিধ্বস্ত। এই এলাকার মানুুষের উন্নয়ন করা আমার মূল প্রতিশ্র“তি। আমি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এই এলাকার অনেক উন্নয়ন নকশা তৈরী করে বাস্তবায়ন করতে পারবো। তিনি আরো বলেন,আইলা বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য দলের উচিত আমাকে মনোনয়ন দেওয়া।

স্থানীয়রা জানান, খুলনার এই এলাকায় ২০০৯ সালে আইলা আঘাত হানার পর এখনও অবহেলিত। প্রয়োজনীয় ব্যব¯া’পনার অভাবে এখনও হয়নি সাধারন অনেক মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। যারাই এখানে নির্বাচন করুক প্রত্যেকের নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটানো।

Comments

Post a Comment