নগর যন্ত্রনার আরেক নাম মোটরচালিত রিকশা/ জয়নাল ফরাজী

নগর যন্ত্রনার আরেক নাম মোটরচালিত রিকশা/ জয়নাল ফরাজী
নগরীতে একদিকে অবৈধ ইজিবাইক চষে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীদের মরণঘাতী হয়ে দাড়িয়েছে মোটর চালিত রিকশা। ভাড়া কম হলেও বেশিরভাগ লোকের মূল্যায়ন এমন যে, এসব রিকশার চালকরা রিকশা চালায় বেপরোয়া গতিতে। যেখানে সেখানে করা হয় পার্কিং। কাঠামোগত দিক থেকে যানবাহনটি হালকা হওয়ায় হঠাব্রেক কষলে উল্টে যায়। প্রতিদিন এই যানে চড়ে নগরীতে অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে অনেকে। খুলনা সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, নগরীর মোটর চালিত রিকশার কোনো অনুমোদন নেই। প্রতিদিনই নগরীতে এই রিকশার সংখ্যা বাড়ছে। কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় নগর জীবনে এই যানবাহনটি ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে মোটর চালিত রিকশার সংখ্যা আড়াই হাজার ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এসব পরিবহনের কোনো অনুমোদন নেই। আর দেখারও যেন কেউ নেই। ফলে  নিয়ন্ত্রনহীনভাবে চলছে এই মরণযান।
জানা যায়, নগরীর অযান্ত্রিক যানবাহনের অনুমোদন দেয় খুলনা সিটি করপোরেশন। যান্ত্রিক যানবাহনের কোনো অনুমোদন সিটি করপোরেশন দেয় না। কিন্তু মোটরচালিত রিকশা প্রস্তুত আমদানিকারকরা অযান্ত্রিক রিকশার লাইসেন্স ব্যবহার করছে মোটরচালিত রিকশার সম্পর্কে  জানতে চাইলে কেসিসি এক কর্মকর্তা বলেন, মোটরচালিত রিকশার অনুমোদন সিটি করপোরেশন দিতে পারে না। সেহেতু যারা অযান্ত্রিক রিকশার লাইসেন্স যান্ত্রিক রিকশার ব্যবহার করছে তা অবৈধ। সিটি করপোরেশন থেকে এই ধরনের কোনো অনুমোদন কাউকে দেয়া হয়নি।
জানা যায়, রাজধানী ঢাকার উত্তরাস্থ বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল রিকশা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিভাটেক ২০১০ সালে রিকশা তৈরির কাজ শুরু করে। চীন থেকে মোটর আমদানি করে দেশের ব্যাটারি ব্যবহৃত হচ্ছে এসব রিকশায়। বর্তমানে আরও দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান এসব রিকশা তৈরির কাজে জড়িয়ে পড়েছে। এসব রিকশা গঠন সাধারণ রিকশার চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। কাঠের পরিবর্তে লোহা ব্যহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত লাগানো হচ্ছে ইলেকট্রিক্যাল মেকানিক্যাল পার্টস। মোটর চালাতে ৪৮ ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহার করা হচ্ছে এই রিকশায়।
এসব রিকশার ঘন্টায় গতিবেগ ২০-২৫ কিলোমিটার। এই রিকশা তৈরিতে খরচ পড়ছে ৪৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকা। মোটর চালিত এসব রিকশা তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো শুরুর দিকে বলেছিল, এসব রিকশার ব্যাটারির চার্জ হবে সৌরবিদ্যুতে। রিকশার ছাদে বসানো থাকবে একটি সৌরবিদ্যুপ্যানেল। বাস্তবে দেখা গেছে কোনো রিকশায়ই ধরনের কোনো সৌরবিদ্যুপ্যানেল রাখা হচ্ছে না। যাদের সাধারন রিকশার লাইসেন্স রয়েছে তারা মোটরচালিত রিকশা তৈরি করে ওই লাইসেন্স লাগিয়ে চালাচ্ছেন। গতকাল নগরীর নিউমার্কেট এর সামনে দেখা মিলে মোটরচালিত রিকশা চালক কামাল হোসেনের সাথে। তার রিকশায় চড়ে যাওয়া হয় ডাকবাংলা মোড়ে। ভাড়া সাধারন রিকশার মতোই। ওই চালক জানান, গত-১০ মাস ধরে সে এই রিকশা চালাচ্ছে। সে জানায়, মালিককে দেয়ার পরও প্রতিদিন তার ২৫০-৩০০ টাকা থাকে। এর আগে সাধারন রিকশা চালিয়েছে সে অনেকদিন।



Comments