খুলনায় কপাল পুড়লো আওয়ামীলীগের ৩ এমপি’র/ জয়নাল ফরাজী

খুলনায় কপাল পুড়লো আওয়ামীলীগের এমপির/
মনোনয়ন পেলেন পঞ্চানন, মিজান,
মন্নুজান, সুজা, নারায়ণ নুরুল হক
জয়নাল ফরাজী
আগামী জানুয়ারী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থীদের নাম। অবস্থান ঝুঁকিতে থাকায় খুলনার ৬টি সংসদীয় আসন থেকে বাদ পড়েছেন ৩জন বর্তমান এমপি। এরা হলেন ননী গোপাল মন্ডল (খুলনা-), মোল্যা জালাল উদ্দিন (খুলনা-), সোহরাব আলী সানা (খুলনা-)
খুলনা- (দাকোপ-বটিয়াঘাটা)   আওয়ামীলীগের দূর্গখ্যাত এই আসনে এবার নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা সভাপতি পঞ্চানন বিশ্বাস। তিনি ১৯৯৬ সালে উপ-নির্বাচনে এবং ২০০১ সালে সরাসরি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত নির্বাচনে তার  অবস্থান ঝুঁকিতে থাকায় দলীয় মনোনয়ন পাননি। এবার তিনি যোগ্যতা প্রমানে আরেকটি সুযোগ পেলেন। আর বাদ পড়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল।
এই আসনে আওয়ামীলীগের পক্ষে আরও যারা মনোনয়ন ক্রয় করেন তারা হলেন জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ, বর্তমান সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডল, দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান, চালনা পৌর মেয়র . অচিন্ত্য কুমার মন্ডল, মহিলা এমপি নুর আফরোজ আলী, কেন্দ্রীয় নেতা অসিত বরন বিশ্বাস, এড. নিমাই রায়, দাকোপ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত রানী সরদার।
খুলনা- (সদর-সোনাডাংগা)   নগরীর এই আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন গত নির্বাচনে ৬৭০ ভোটে হেরে যাওয়া মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছে অল্প ভোটে হেরে যান।
এই আসনে দলীয় সমর্থন পেতে আরও যারা মনোনয়ন সংগ্রহ করেন তারা হলেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি নুর আফরোজ আলী, সদর থানা আওয়ামীলীগ নেতা এ্যাড. সাইফুল ইসলাম, বিএমএ কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডাঃ বাহারুল আলম, যুবলীগ নেতা এ্যাড. আনিসুর রহমান পপলু।
খুলনা- ( খালিশপুর-দৌলতপুর খানজাহান আলী ) খুলনার এই গুরুত্বপূর্ণ আসনটিতে এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সরকারের শ্রম কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। শ্রমিক অধ্যুষিত এই আসনটিতে এবার জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন জন। বাকি তিন জন হলেন মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম, কেসিসির সাবেক প্যানেল মেয়র- মনিরুজ্জামান খান খোকন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা শেখ সৈয়দ আলী। কিন্তু সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আবারও দলের হাল ধরার সুযোগ পেলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নেত্রী  মন্নুজান সুফিয়ান।
খুলনা- (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া)   নগরীর পার্শ্ববর্তী এই আসনে এবার প্রার্থী হলেন এই আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এস.এম মোস্তফা রশিদী সুজা। আর বাদ পড়লেন বর্তমান এমপি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোল্যা জালাল উদ্দিন। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার মনোনয়ন সংগ্রহ করেন জন। বাকি জন হলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা . মসিউর রহমান, তার পতœ ইভা রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান জামালরূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আকবার শেখ, তেরখাদা উপজেলা চেয়ারম্যান সরফুদ্দিন বাচ্চু, বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোদাচ্ছের হোসাইন।
খুলনা- (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে  ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি নারায়ন চন্দ্র চন্দ। তুমুল চেষ্টার পরও বাদ পড়েছেন অর্থনীতিবিদ . মাহবুব-উল-ইসলাম। গত নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েও তিনি পাননি। এবারও বর্তমান এমপি কাছে মনোনয়ন দৌড়ে হেরে গেলেন তিনি।
এই আসনে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেন জন। বাকি জন হলেন ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী আঃ হাদী, .লীগ নেতা শেখ আকরাম হোসেন, অজয় সরকার, সরদার আবু সালেহ, মোস্তফা সরোয়ার, যুবলীগ নেতা মৃণাল জোয়াদ্দার।
খুলনা- (পাইকগাছা-কয়রা) খুলনার সর্বশেষ এই আসনটিতে পুনরায় আওয়ামীলীগের  দলীয় মনোনয়ন পেলেন ১৯৯৬ সালের এমপি এ্যাড. নুরুল হক। বর্তমান সংসদ সদস্য সোহরাব আলী সানার অবস্থান ঝুঁকিতে থাকায় এবং দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে ক্ষমতাসীনদের এই  আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের আভাষ বেশ জোরালো ভাবেই অনেক আগে থেকে শোনা যাচ্ছিলো।
এই আসনে এবার মনোনয়ন সংগ্রহ করেন সর্বাধিক সংখ্যক ১২জন। বাকি ১০জন হলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা . মসিউর রহমান, তার পতœ ইভা রহমান, নুরুল হকের ছেলে শেখ মনিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা গাজী মোহাম্মদ আলী, পাইকগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান রশীদুজ্জামান মোড়ল, আবুল হোসেন জোয়াদ্দার, পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর, যুবলীগ নেতা আক্তারুজ্জামান বাবু, এস.এম শফিকুল সুব্রত গাইন।

আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানায়, দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা যাচাই বাছাই করে মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনে প্রার্থী নয় প্রতিক দেখে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি

Comments