বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ মহানগরী খুলনা/ জয়নাল

বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধ মহানগরী খুলনা
* স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থার দাবি উন্নয়ন কমিটির
* আজও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা

জয়নাল ফরাজী: 
জলাবদ্ধতা খুলনা মহানগরীর নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। একটু বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় নগরী। সময় অসময়ে যখনই বৃষ্টিপাত তখনই জলাবদ্ধতা। এটি এখন স্থায়ী সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে নগরীতে স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন কমিটির মহাসচিব। 
গতকাল দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে কালো মেঘ ঘনীভুত হয়ে নগরীতে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে খুলনা। বিকাল ৪টা ২০ মিনিট পর্যন্ত কমবেশী বৃষ্টি হয়। এতে মুহুর্তের মধ্যে নগরীর প্রধান প্রধান এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পিটিআই মোড়, মর্ডান ফার্ণিচারে মোড়, রয়েল মোড়, কেডিএ এ্যাভিনিউ, সামছুর রহমান রোড, শান্তিধাম মোড়, শিববাড়ী মোড়, ময়লাপোতা মোড়, নিউমার্কেট, বয়রা, সোনাডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় হাটু সমান পানি জমে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ে নগরবাসী। বৃষ্টি কমে যাওয়ার পর পানি সড়তে দুই-তিন ঘন্টা লেগে যায়। এর ফলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। 
সন্ধ্যা ৬টার সময় রয়েল মোড়ে পথচারী আবুল হোসেন জানান, বর্তমানে খুলনা নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এর ফলে নগরী তলিয়ে যেতে ৫মিনিটের বৃষ্টিই যথেষ্ট। সাবেক মেয়র খুলনার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করলেও বর্তমান মেয়রের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছাড়াও খুলনায় গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা রয়েছে যা সমাধানে বা ব্যবস্থা গ্রহণে সিটি মেয়রের সু-দৃষ্টি প্রয়োজন। 
খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে বলেন, জলাবদ্ধতা নগরবাসীর দুর্বিষহ জ্বালা। এজন্য যথেষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। খুলনার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে কেসিসির দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। খুলনার সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক স্থানীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক কাজ করে গেছেন। তবে এবার নির্বাচিত না হওয়ায় তিনি তার কাজ সমাপ্ত করতে পারেন নি। কিন্তু বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনির কাছে যে নগরবাসীর যে প্রত্যাশা তিনি তা পূরণ করতে পারেন নি। সাবেক মেয়রের কাজগুলো সমাধান করলে তিনি প্রশংসা পেতেন। এ বিষয়ে খুলনা উন্নয়ন কমিটির পক্ষ থেকে একাধিকবার তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি তা করতে পারেন নি। 
মশক সমস্যা নিয়ে এ নাগরিক নেতা বলেন, মশার উপদ্রব নগরীতে বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে যাদের কর্তব্য সেই কেসিসিরই কোনও মাথাব্যথা নেই। শুনেছি মশক নিধনে ইতোমধ্যে কেসিসি কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে আমার জানা মতে ১৭নং ওয়ার্ডে মশক নিধনে কোনো কার্যক্রম চোঁখে পড়েনি। 
তিনি আরও বলেন, খুলনার স্থানীয় সমস্যা সমাধানে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তথা সদর আসনের সংসদ সদস্যের সাথে মতিবিনিময় করতে পারেন। এতে দলমত নির্বিশেষে খুলনার উন্নয়নে কাজ করা যাবে। 
এদিকে গতকাল রবিবার রাত ৮টায় খুলনার আবহাওয়ায় জানানো হয়েছে, আজ সোমবারও খুলনায় হালাকা বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল খুলনায় প্রতি ঘন্টায় ৮ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে গেছে। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৮৬ শতাংশ। গতকাল খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিু ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

Comments