নগরীর অভিজাত এলাকায় প্রকাশ্যেই ড্যান্ডি সেবন
জয়নাল ফরাজী:
নগরীর অভিজাত এলাকায় প্রকাশ্যেই ড্যান্ডি সেবন করছে পথশিশুরা। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সদিচ্ছার অভাবেই প্রকাশ্যে তারা এই নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে পথশিশুদের জীবন ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
ড্যান্ডি এক ধরনের আঠা যা মূলত সলিউশন। এতে রয়েছে টলুইন নামে একটি মাদক উপাদান। এটি নিলে ক্ষুধা ও ব্যথা লাগে না। পলিথিন ও কাপড়ে মেখে নিশ্বাসের সাথে শিশুদের ড্যান্ডি সেবন খুবই পরিচিত দৃশ্য। এটি এখন পথশিশুদের কাছে খুবই জনপ্রিয় মাদক। বলাই বাহুল্য দীর্ঘমেয়াদের এসব মাদক গ্রহণ এই শিশুদের ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। অন্যদিকে তারা তাদের রোজগার মাদকের পেছনে ব্যয় করে আরো অর্থলাভের উপায় হিসেবে চুরি, ছিনতাই, প্রতারণা, এমনকি খুন খারাবির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। দেশে শিশু কিশোর অপরাধীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যাই এর প্রমাণ।
সরেজমিনে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নগরীর অভিজাত এলাকা হাদিস পার্কের পাশে ড্যান্ডি সেবন করতে দেখা যায় একদল পথশিশুকে। যাদের মধ্যে বাবু (১২), শামিম (১২), হোসেন (১৩) ও সুজন (১৩) উলে¬খযোগ্য। এদের দলে রয়েছে ১৫-১৬জন। এরা সকলেই পথশিশু। এরা নগরীর হাদিস পার্ক, সোসাইটি সিনেমা হলের মোড়ে মাদক সেবন করে। অসৎ সঙ্গের কারণে তারা প্রত্যেকেই মাদকসেবী।
এদের মধ্যে বাবুর বাড়ী দিঘলিয়ার মিল্কী দেয়ার গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুর রশিদ ও মায়ের নাম রাফেজা বেগম। তার পিতা খুলনা থানার মোড়ে একটি চায়ের দোকানদার।
মাদকসেবী এ শিশু দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনকে জানায়, সে মাদকের অর্থ যোগাতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। বিশেষ করে চুরি, পকেটমার, প্রতারণা ও ভিক্ষায় জড়িয়ে পড়ে। এই অর্থ দিয়ে প্রতিদিন শঙ্খ মার্কেটের রুহুলের দোকান থেকে ২৫-৩০ টাকার মধ্যে ড্যান্ডি বা সলিউশন কিনে নেয়। তারপর কাপড়ে ঢেলে নিশ্বাসের মাধ্যমে ড্যান্ডির ঘ্রাণ গ্রহণ করে। এতেই সে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি এদের নেশার ট্যাবলেটও সেবন করতে দেখা যায়।
গতকাল সন্ধ্যায় শঙ্খ মার্কেটের ফিরোজা মেডিকেল থেকে ওহেজ নামের এক বিক্রেতার কাছ থেকে নেশার ট্যাবলেট কিনে বের হওয়ার সময় এলাকার কিছু লোক ও দক্ষিণাঞ্চল প্রতিদিনের এক সাংবাদিক এই মাদকসেবী বাবুকে হাতেনাতে ধরে ফেললে সে এসব তথ্য জানায়। পরে তার কান্নাকাটি ও বয়স বিবেচনা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খুলনায় পথশিশুদের মাদকে আসক্তির বিষয়ে সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, অসচেতনার অভাবে এসব পথশিশু মাদকে আক্রান্ত হচ্ছে। নগরীতে দিনকে দিন শিশুদের মাদক সেবনের প্রবণতা বেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন সংগঠন তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে এসব শিশুদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারে।
Comments
Post a Comment