এক যুগেও হয়নি সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যার বিচার

জয়নাল ফরাজী:
১৫ জানুয়ারি ২০১৬। সাংবাদিক মানিক সাহার হত্যার বারোতম বার্ষিকী। ২০০৪ সালের এই দিনে খুলনা প্রেস ক্লাবের অদূরে বোমা মেরে দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, এই এক যুগেও হত্যা মামলাটির বিচারকাজ শেষ হয়নি।
সাক্ষীর অভাবে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচার কাজ নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। বিধি অনুযায়ী মামলার দু’টি অংশ। একটি হত্যা মামলা (দায়রা ২০৪/২০০৮) এবং অন্যটি বিষ্ফোরক আইনে মামলা (এসটিসি ২০২/২০০৪)। এই দুটো মামলারই সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।
মানিক সাহা হত্যাকান্ডের তদন্ত বেশ হাঁকডাক দিয়েই শুরু হয়। তদন্ত শেষে জমা দেয়া চার্জশিটে হত্যাকারীদের সম্পর্কে স্পষ্ট কোন ধারণা দেয়া হয়নি। তদন্তে বলা হয়, চরমপন্থীরা এই হত্যাকান্ডের জন্যে দায়ী। তাও আবার পরষ্পর দুই বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্যদের আসামী করা হয়। আসামীদের মধ্যে একমাত্র আসামী নুরুজ্জামানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী আছে। তবে সেই জবানবন্দীও সে প্রত্যাহারের আবেদন করে।
মামলায় মোট আসামী ছিল ১৩ জন। সম্পুরক চার্জশীটে আরও একজনকে অভিযুক্ত করায় মোট আসামী হয় ১৪ জন। এরমধ্যে তিনজন ক্রসফায়ারে নিহত হয়। নিহতরা হচ্ছে আ: রশিদ, আলতাফ ওরফে বিডিআর আলতাফ ও মাহফুজ ওরফে মাফিজ ওরফে নাসিম ওরফে শফিকুল ইসলাম। জীবিত আসামীর সংখ্যা ১১ জন।
এরা হচ্ছে আকরাম হোসেন হাওলাদার ওরফে আকরাম হাওলাদার ওরফে বোমারু হাওলাদার, আলী আকবর শিকদার ওরফে শাওন, হাই ইসলাম, নুরুজ্জামান, মিঠুন, সুমন, সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল ওরফে বুলবুল, কচি ওরফে ওমর ফারুক, সাকা ওরফে সাকাওয়াত হোসেন ও সরোয়ার হোসেন ওরফে সরো। এই মামলায় স্বাক্ষী করা হয় ৩৫ জনকে।
দ্রুত বিচার আদালতে প্রথমে মামলাটির বিচার কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ -৩এর আদালতে হত্যা মামলার সাক্ষ্য শেষে যুক্তি-তর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপিত হয়। এই মামলাটির রায় দেওয়ার দিনও ঠিক হয়। কিন্তু তার আগে অজ্ঞাত কারণে মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
আর বিষ্ফোরক দ্রব্য মামলাটির বিচার কাজ হয় খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত -১এর আদালতে। এই মামলাটিও পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। তাও পাঁচ বছর আগের কথা। যা বর্তমানে মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্যে তারিখের পর তারিখ পড়ছে।
এ বিষয়ে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকার পক্ষীয় আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট সুলতানা রহমান শিল্পী বলেন, সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলাটির বর্তমানে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। বেশ কয়েকজন সাক্ষীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে ৪২ জনের মত সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলাটির বিচার শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Comments