চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে খুলনা

চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে খুলনা
আজ ও আগামীকাল তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে

জয়নাল ফরাজী
৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে হঠাৎ করেই খুলনাঞ্চলে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ ব্যাপক ঘরবাড়ী। খুলনা নগরীসহ আশপাশের উপজেলাগুলোতেও ক্ষতি চোঁখে পড়ার মতো। এরপর দিন বুধবার সকাল থেকেই খুলনাঞ্চলে ব্যাপক তাপপ্রবাহ। চৈত্রের গা’ পোড়ানো তাপে অতিষ্ঠ জনজীবন। আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খুলনায় এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। আজ মঙ্গল ও আগামিকাল বুধবার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। 
গতকাল সোমবার খুলনায় তাপমাত্রা ছিলো ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আশপাশের জেলাগুলোতেও প্রায় একই রকম তাপমাত্রা। যার ফলে প্রচন্ড গরমে পুড়ছে খুলনাসহ গোটা দেশ। রাস্তা দিয়ে হাটলে মনে হয় হরতাল চলছে। আর সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হয়েছে মরার ওপর খাড়ার ঘা। দিনমজুর মানুষের বিশেষ করে রাজমিস্ত্রি, রিক্সাচালক, কৃষকের হয়েছে মরণ দশা। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যেও রোদে পুড়ে তাদের কাজ করতে হচ্ছে। 
তীব্র গরমে ফসলি মাঠ ফেটে চৌচির। খরার মৌসুমে মাঠ, খাল-বিল শুকিয়ে যেন খাঁ খাঁ করছে। বৃষ্টির জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে গোটা দেশের লোক। তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে খাবার স্যালাইনের প্রতি সাধারণ মানুষের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপকহারে। এছাড়া পানীয় ফল হিসেবে গন্য, ডাব, তরমুজ ও ফুইটি’র প্রতি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে তরমুজের প্রতি সাধারণ লোকদের আগ্রহটা একটু বেশিই। কেউ বা মনের অজান্তে গেয়ে উঠছে আল্লাহ মেঘ দে পানি দে ছায়া দে রে তুই। যদি কালটা বসন্ত তবুও হয়ত বা মনে পড়ে ‘ঘাম ঝরে দরদর গ্রীষ্মের দুপুরে, খাল-বিল চৌচির জল নেই পুকুরে’ কবিতার এই লাইনটুকু।
চৈত্রের শেষে তীব্র তাপদাহে পুড়ছে খুলনাসহ গোটা দেশ। তীব্র গরমে বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের জনজীবন। খুলনা আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, অসহনীয় এ অবস্থা আরও কয়েকদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনাও নেই। তবে বৃষ্টি হলেই কমবে গরম। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার খুলনায় তাপমাত্রা ছিলো ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ও আগামিকাল তাপমাত্রা বেড়ে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে আসতে পারে। তবে দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা কমছে। যাতে গতকাল রাতে খুলনায় তাপমাত্রা ছিলো ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  
চলতি এপ্রিল মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, এ মাসে বঙ্গোপসাগরে দু’একটি নিম্নচাপ হতে পারে, যার মধ্যে অন্ততঃ একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। চলতি মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র এবং অন্যান্য এলাকায় দু’তিনটি মৃদু বা মাঝারি তাপপ্রবাহ অনুভূত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
অপরদিকে ভ্যাপসা গরমের পাশাপাশি রয়েছে লোডশেডিং। গরম শুরুর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। দিনের পাশাপাশি মধ্যরাতেও লোডশেডিং হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় বাড়িতে থাকাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে লোকজনের। এ অবস্থায় জনজীবন যেন এক প্রকার অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

Comments